বিবেকানন্দের পাগড়ি উপাখ্যান


রনতোষ মুখার্জী : শিকাগো ধর্ম মহাসভায় সেই ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে সেদেশের মানুষের মন জয় করে সবে দেশে ফিরেছেন স্বামীজি। এর ঠিক পরপরই বার্লিন থেকে পোর্সিলিনের তৈরি শ্রীরামকৃষ্ণের মূর্তিটি নিয়ে আলমবাজার থেকে একটি নৌকায় আরও কয়েকজন সন্ন্যাসীকে নিয়ে হাওড়ার রামকেষ্টপুরে নবগোপালবাবুর বাড়িতে পদার্পণ করেন স্বামীজি।

কে এই নবগোপাল? তিনি ছিলেন তৎকালীন একটি মার্চেন্ট ফার্মের চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট। যিনি ঘটনাচক্রে রামকৃষ্ণের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন অনেক আগেই।সেই নবগোপালবাবুর বাড়িতে পৌঁছাতে রামকেষ্টপুর ঘাট থেকে খালি পায়ে খোল বাজিয়ে গান গাইতে গাইতে এগিয়ে চললেন এই তরুন সন্ন্যাসী। পথের দুধারে তাকে দেখতে তখন জনসমুদ্র।নবগোপালবাবুর বাড়িতে পৌঁছেই স্বামীজি আবদার করেন রামপাখির মাংস খাওয়ার। নবগোপালবাবুর স্ত্রী নিস্তারিনীদেবী রামপাখির মাংস রেঁধে খাওয়ালেন। রামপাখির মাংস রান্নার খুব প্রশংসা করে তিনি কিছু উপহার দিতে চাইলেও সেইসময় স্বামীজির কাছে দেবার মত কিছুই ছিল না। স্বামীজি তখন সেই পাগড়িটিকে সামান্য উপহার বলে নবগোপালবাবুদের দিয়ে যান।

সেই থেকে ওই পাগড়িটি এখনও নবগোপালবাবুদের হাওড়ার রামকৃষ্ণপুরে ঘোষবাড়িতে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতি মাঘী পূর্ণিমায় সেই পাগড়ি জনসমক্ষে প্রদর্শিত হয় এবং ঘোষবাড়িতে বিশেষ পুজোরও আয়োজন করা হয়। বিবেকানন্দের শিকাগো গমনের বহুমূল্য সেই পাগড়ি একবার চাক্ষুস করতে ঐ সময় ঘোষবাড়িতে বহু ভক্তের সমাগম হয়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।

11 − two =