ভয়াবহ বন্যার কবলে কয়েক লক্ষ মানুষ, বন্যার্ত মানুষদের স্থানান্তর করা হচ্ছে অন্যত্রে


রুপম দাস:  উদয়নারায়ণপুরে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। মঙ্গলবার দুপুরে জলের তোরে ভেসে যায় এক কিশোরী রচনা রক্ষিত। উদয়নারায়ণপুরের বিডিও প্রবীর কুমার শীট বলেন, আমরা খবর পেয়েই তাকে উদ্ধার করার জন্য টিম পাঠায় এবং তাকে উদয়নারায়নপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভর্তি করা হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই রচনা মারা যায়। উদয়নারায়ণপুরের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে এবং তিনটি আংশিক। প্রশাসন সূত্রে খবর ডিভিসি জল ছাড়ার পরিমাণ কমানোর ফলে উদয়নারায়ণপুরে আর নতুন করে কোন এলাকা প্লাবিত হয়নি বরং জল সেখান থেকে কিছুটা নামছে। প্রশাসনের তরফে লোকেদের আরও সচেতন ও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্লক প্রশাসনকে মাইকিং করতে বলা হয়েছে।

এদিকে আমতা ২ ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত সম্পূর্ণ প্লাবিত ছিলই। তার ওপর সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সারাদিন ধরে আরো দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত হয় নতুন করে। ঝিকিরা এবং ঝামটিয়া এই দুটি পঞ্চায়েত এলাকার নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আমতা দু’নম্বর ব্লক এলাকায়। পাশাপাশি আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল বলেন, দ্বীপাঞ্চলের মানুষদের জন্য ত্রাণ ব্যবস্থাকে সহজ করার জন্য কুলিয়া ঘাট এলাকায় একটি অস্থায়ী অফিস করা হয়েছে। সেখানে ত্রাণের মালপত্র পাঠানো হয়েছে। দ্বীপাঞ্চলের মানুষরা সেখান থেকেই ত্রাণ নিয়ে যেতে পারবেন বা প্রশাসনের লোকেরাও সেখান থেকে ত্রাণ সরবরাহ করতে পারবেন।  এদিন হাওড়ার আমতা উদয়নারায়নপুর এর বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে আসেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। সঙ্গে ছিলেন মমতার সুকান্ত পাল, উদয়নারায়নপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা। হাওড়া, হুগলি সহ রাজ্যে বন্যার জন্য কেন্দ্রকেই দায়ী করলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী। তার বক্তব্য ডিভিসির জলাধার সংস্কার করা হয়নি। নদীর নাব্যতা বাড়ানো হয়নি দীর্ঘদিন ধরে। তাছাড়া রাজ্যের সঙ্গে কথা না বলেই ডিভিসি জল ছাড়ায় এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আসলে ওরা বাংলার মঙ্গল চায় না। এটা ওদের রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা। শুধু তাই নয় কেন্দ্র সরকার বিভিন্ন খাতে তাদের যথাযথ টাকা দিচ্ছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন। সেচ মন্ত্রী আরও বলেন, তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্টেট ডেভলপমেন্ট ফান্ড থেকে রাজ্যের উন্নয়ন করছেন। তিনি আরো বলেন, বিরোধী দলনেতা বন্যা পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন। আসলে তিনি তো দু’বছর এখানে ছিলেন। তাহলে কেন্দ্রের সেই দায় শুভেন্দু অধিকারীর উপরেও বর্তায় বলেও নাম না করে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন। সর্বোপরি কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। কিন্তু এর মাঝে সাধারণ মানুষ আজ বিপর্যস্ত। কি পরিস্থিতিতে তারা দিন কাটাচ্ছেন সেটা একমাত্র ঈশ্বর জানেন। এইভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে কি পরিস্থিতি তৈরি হবে তা সকলেরই অজানা।

 

 


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।

fifteen + two =